সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে ইতিমধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। দুই দিনের ব্যবধানে দেশের বিভিন্ন বাজারে চাল, ডাল, তেল, চিনি, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।
রাজধানীর নিউমার্কেটের বিছমিল্লাহ রাইস এজেন্সির মালিক সুমন মাহমুদ জানান, চালের দাম বাড়তির দিকে। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় মিল মালিকেরা সুযোগ নিচ্ছেন। সব চালের দাম কেজিপ্রতি কমপক্ষে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাঁর দোকানে গতকাল রোববার প্রতি কেজি মিনিকেট ৭০-৭১ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৮২-৮৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
একইভাবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দামও লিটারপ্রতি ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সচিব নূরুল ইসলাম মোল্লা গতকাল বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছেন বলে জানান।
জানতে চাইলে টিকে গ্রুপের পরিচালক সফিকুল আথহার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরাও দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা দিয়েছি। এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দাম বিশ্লেষণ করবে। যদি তারা যৌক্তিক মনে করে তাহলে দাম বাড়াবে।’
প্রস্তাবে বলা হয়, এক লিটারের বোতল সয়াবিন তেলের দাম ১৮৫ থেকে বাড়িয়ে ২০৫ টাকা, ১৬৬ টাকার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ এবং ৯১০ টাকার পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৯৬০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়।
মৌলভীবাজারের চিনি ও ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাজারে প্রতি মণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) সয়াবিন তেলে বেড়েছে ৩০০ টাকা, পাম তেলে ৪০০ টাকা এবং চিনি বস্তায় ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, আগে প্রতি মণ খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫ হাজার ৮০০ টাকা। গতকাল তা ৬ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে ৪ হাজার ৩০০ টাকার পাম তেল গতকাল ৪ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ৭৬ টাকার চিনি বিক্রি হয়েছে ৭৯ টাকায়।
পুরান ঢাকার চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল মানভেদে ৫৯-৬৭ টাকা। গত শনিবার তা বিক্রি হয়েছে ৬১-৬৮ টাকা। ৬১-৭৪ টাকার নাজিরশাইল ৬২-৭৫ টাকা, ৪৭-৫১ টাকার লতা (বিআর-২৮) বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫৩ টাকা, ৪০-৪১ টাকার গুটি স্বর্ণা ৪২-৪৩ টাকা ও ৪৮-৫০ টাকার পাইজাম স্বর্ণা গতকাল ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পুরান ঢাকার বাবুবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুর রশিদ জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহনভাড়া ৫-৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় ২৬০ বস্তা চাল আনতে পরিবহনভাড়া গুনতে হতো ১৭ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। এই অতিরিক্ত ভাড়া চালের ওপর পড়ছে।
রহমতগঞ্জ এলাকার ডাল ব্যবসায়ী আলী আজগর জানান, প্রতি কেজি ডালের দাম দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি উন্নত মানের মসুর ডালের দাম ছিল ১২৯-১৩০ টাকা। গতকাল তা ১৩১-১৩২ টাকায়, ৯০-৯১ টাকার বোল্ডার মসুর ডাল ৯২-৯৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে।